নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কায়েমসাইর ক্রিয়েটিভ স্কুল এন্ড কলেজ এলাকায় স্থানীয় মাদকসেবী ও জুয়ারীসহ বখাটেদের উৎপাতে ছাত্রীরা আতঙ্ক নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে। শুধু তাই নয়, দিনদুপুরে প্রকাশ্যে বিদ্যালয়ের পাশের ভবনের ছাঁদে বসানো হয়েছে জুয়ার মাঠ। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে বলে ওঠেছে অভিযোগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কায়েমসাইর এলাকায় স্থানীয় শিক্ষা বিস্তারে বেসরকারীভাবে কায়েমসাইর ক্রিয়েটিভ স্কুল এন্ড কলেজ নামে প্লে থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হচ্ছে। প্লে থেকে ৫ম শ্রেণির ছাত্রীদের সমস্যা না হলেও ৬ষ্ট থেকে একাদশ শ্রেণির প্রায় ৩ শতাধিক ছাত্রীই আতঙ্ক নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। অনেকে ছাত্রীই ভয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
কারন হিসেবে জানা যায়, নগরপাড়া বাজার থেকে ২ কিলোমিটার দুরে কায়েমসাইর এলাকায় ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে মাদকসেবীদের সংখ্যা। এছাড়াও বখাটের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন বিদ্যালয় ক্লাস শুরুর আগে রাস্তায় দাড়িয়ে একদল বখাটে স্থানীয় ছাত্রীদের ইভটিজিং করে। তাছাড়া বিদ্যালয় ভবনের পাশের মিছির আলীর নির্মাণাধীন একটি দ্বিতল ভবনের ছাঁদে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী জুয়ারী টিম জুয়ার আড্ডা বসিয়ে গান বাজনা করে থাকে। নানাভাবে ছাত্রীদের মাঝে টার্গেট করে হয়রানী করে।
এতে কোন অভিভাবক বা শিক্ষক প্রতিবাদ করতে গেলেই লাঞ্চিত হতে হয়। স্থানীয় জুয়ারী উজ্জল মিয়া, মাদকসেবী শাকিলসহ একটি পক্ষ নিয়মিত দলবেঁধে জুয়ার আড্ডা বসিয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিঘœ ঘটাচ্ছে বলে জানান নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমা বেগম জানায়, বিদ্যালয়ের পাশের ভবনের ছাঁদ থেকে জুয়ারীরা মাঝে মাঝে ঢিল ছুড়ে মারে। এতে আতঙ্কিত হয়ে মাঠে খেলতে বেরুয় না অন্য ছাত্রীরা। তবে ছাত্ররা কোন হয়রানীর শিকার হয় না বলে দাবী তার।
এ বিষয়ে স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন ভুইয়া বলেন, কায়েমসাইর এলাকায় ইয়াবাসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। থানা পুলিশকে জানালেও তেমন সুরাহা পাননি এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কায়েমসাইর ক্রিয়েটিভ স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নোয়াব ভুইয়া বলেন, বিদ্যালয়ে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে ৩ শতাধিকই ছাত্রী। ফলে এসব ছাত্রীদের টার্গেট করে স্থানীয় বখাটে ও জুয়ারীরা বিদ্যালয়ের যাতায়াত পথে নানাভাবে হয়রানী করে থাকে। এতে উপস্থিতি অনেকাংশে কম। তাছাড়া এসব কারনে স্থানীয় অভিভাবকরা বাল্য বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব বিষয়ে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তবে দ্রুত প্রতিকার চান তিনি।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, সমস্যাটা জেনেছি, এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সব রকম আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।